সূচনা অনুষ্ঠানে মঞ্চে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়। সব শেষে ছিল বর্ণাঢ্য র্যালি শোভাযাত্রার। এতে শিক্ষক, অতিথি, সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
বেলুন উত্তোলন ও র্যালি সকল ধর্মীয় গ্রন্থ থেকে পাঠ জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা ও ৭৫ বছর পূর্তির প্রতীকি পতাকা উত্তোলন এবং শপথ গ্রহণ।
১৯৫০ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা উপস্থিত্বে মহা মিলন মেলা।
৫ ই এপ্রিল শনিবার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বান্দরবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে প্লাটিনাম জয়ন্তী'র দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয় । অনুষ্ঠানে ১৯৫০ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন । এছাড়াও শিক্ষক ও গুণীজন সম্মাননা এবং মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। দিনব্যাপী সাজানো অনুষ্ঠান মালায় প্রাণবন্ত একটি আয়োজন হতে যাচ্ছে প্লাটিনাম জয়ন্তী। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত্ব পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।
অতিথি উপস্থিতি- বান্দরবান সেনা জোন কমান্ডার লেঃ কর্ণেল মাহমুদুল হাসান পিএসসি, হোসাইন মোঃ রায়হান কাজেমী পিপিএম-সেবা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) বান্দরবান, এ সময় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
৭৫ বছর পূর্তিতে প্লাটিনাম জয়ন্তী অনুষ্ঠান উদাযাপন উপলক্ষে -বান্দরবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা, বসন্ত মানেই প্রকৃতির রঙের খেলা। পলাশ ফুলের লাল আভায় মেতে ওঠে -৭৫ বছর পূর্তিতে প্লাটিনাম জয়ন্তী দেয়াল জুড়ে রঙে রঙ্গিন রাঙানো সাঁজোয়া মনের আয়না মতো ডানা নাড়ানোর শিক্ষক, ছাত্র ছাত্রী, কর্মকর্তা/কর্মচারীদের কাহারও যেন ঘুম নেই ;
বান্দরবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্লাটিনাম জয়ন্তী ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে -পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন -তাঁরা প্লাটিনাম জয়ন্তীর বিভিন্ন কর্মসূচি ও পরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন এবং সফল আয়োজনের জন্য সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন। বিদ্যালয়ের গৌরবময় ঐতিহ্য ও শিক্ষার উন্নয়নে তার আন্তরিক সমর্থন ব্যক্ত করেন এবং এ মহতী উদ্যোগে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন।
কর্তৃপক্ষ তাঁর সদয় প্রতিশ্রুতির জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং আগামীর আয়োজনকে সফল করতে একসঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
বান্দরবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্লাটিনাম জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার বহুমুখী সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। পুলিশ সুপার - মোঃ শহিদুল্লাহ কাওছার পিপিএম (বার), অনুষ্ঠানকে সুশৃঙ্খল, নিরাপদ ও সফল করে তুলতে তারা প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি বিভিন্নভাবে সহায়তা প্রদান করেছেন ।
জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ নিরাপত্তা পরিকল্পনা নেওয়া হবে। এছাড়া, যানবাহন নিয়ন্ত্রণ, অতিথিদের নিরাপদ আগমন ও প্রস্থানের ব্যবস্থা, এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিশেষ টহল জোরদার করা হয়েছে ।
এ ছাড়াও, অনুষ্ঠানস্থলে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান, জরুরি পরিস্থিতিতে সহায়তা এবং যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে পুলিশ সদস্যরা সদা প্রস্তুত থাকবে। জেলা পুলিশ এই ঐতিহাসিক আয়োজনে সর্বোচ্চ সহযোগিতা নিশ্চিত করে অনুষ্ঠানকে সাফল্যমণ্ডিত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
বান্দরবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্লাটিনাম জয়ন্তী ২০২৫ উপলক্ষে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। এ উৎসবকে সফল ও স্মরণীয় করে তুলতে বান্দরবান পৌরসভার প্রশাসক উপপরিচালক (ভা:প্রা:), স্থানীয় সরকার, এস এম, মনজুরুল হক -বলেন স্কুলের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্মৃতিচারণ, প্রদর্শনী ও অন্যান্য আয়োজনকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সফল করতে প্রশাসনিক সহায়তা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও প্রয়োজনীয় অনুমতিপত্র প্রদানের বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছেন। প্লাটিনাম জয়ন্তী উদযাপন কমিটি জেলা প্রশাসকের এই সহযোগিতাকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানিয়েছে।
বান্দরবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্লাটিনাম জয়ন্তী (৭৫ বছর পূর্তি) উদযাপনের বিদ্যালয়ের সিনিয়র জুনিয়র প্রাক্তন সকল শিক্ষার্থীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে বিদ্যালয় চত্বর। সিনিয়র-জুনিয়র সবাই মিলে দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে সাজিয়ে তুলছেন স্মরণীয় এ আয়োজন।
উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সবাই একসঙ্গে কাজ করেছেন। কর্মব্যস্ততার মাঝে ছিল স্মৃতিচারণ, আড্ডা আর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার গল্প। অনুষ্ঠানের ভিন্নধর্মী আয়োজন, স্মরণিকা প্রকাশ, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, প্রদর্শনীসহ নানা আয়োজন সফল করতে সবাই নিজেদের সেরাটা দিচ্ছেন।
বিদ্যালয়ের প্রতি ভালোবাসা আর বন্ধুত্বের বন্ধন নতুন করে জাগিয়ে তুলেছে এই আয়োজন। শত ব্যস্ততার মাঝেও অংশগ্রহণকারীদের উচ্ছ্বাস আর আন্তরিক সহযোগিতায় প্লাটিনাম জয়ন্তীর আয়োজন এখন চূড়ান্ত পর্যায়। আসন্ন অনুষ্ঠান স্মরণীয় করে রাখতে সবাই অধীর আগ্রহে কখন আসে ৫ ই এপ্রিল শুধু অপেক্ষায়। প্রাক্তন ও বর্তমান পরম শ্রদ্ধেয় স্যারদের সাথে সাক্ষাৎ এবং ইনভাইট কার্ড হাতে হাতে তুলে দেওয়া । স্যারেরা অনেক আনন্দিত এবং প্লাটিনাম জয়ন্তীতে জয়েন করার আশা ব্যক্ত করেন। ৫ এপ্রিল বর্তমান ও প্রাক্তন সম্মানিত শিক্ষক এবং প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মহামিলন মেলায় পরিণত হয়েছে।
বিভিন্ন শিক্ষাতিদের কথোপকনে --আমাদের ফেলে আসা ছেলেবেলা, ফেলে আসা কৈশোর। প্রিয় বিদ্যাপীঠের সেই দিনগুলো। নস্টালজিক সেই সময়। কত দূরন্তপনা। স্কুল পালানো। স্যারদের বেত। প্রতি সপ্তাহে একটা সিঙারা। আহা কি স্বাদের সেই সিঙারা। দুপুরের টিফিন ছুটিতে ২৫ পয়সা, ৫০ পয়সা ও এক টাকার আইসইক্রিম, বিখ্যাত দুধের মালাই আইসক্রিম । ডনবস্কো উচ্চ বিদ্যালয়ের সাথে টান টান ফুটবল খেলা। খেলা। আবাহনী-মোহামেডান খেলা হলে ছুটির দরখাস্ত নিয়ে হেড স্যারের সাথে নানা অনুনয় বিনয় করা। স্কাউট গেরো শিখা, পিটি ক্লাসের বিশেষ শাস্তি, এক পায়ে দৌড়ানো। আর পড়া শিখে না আসলে স্যারদের সেই বিখ্যাত উক্তি, " দাঁড়া বেঞ্চের উপর দাঁড়া"। আহা আমাদের সেই সব দিন। আমরা আসছি, সেই সব মধুময় দিনগুলোর টানে।
সূচনা অনুষ্ঠানে মঞ্চে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে জাতীয় - মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়। সব শেষে ছিল বর্ণাঢ্য র্যালি । এতে শিক্ষক, অতিথি, সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
অসীম রায় (অশ্বিনী)
বান্দরবান
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন