বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে-যাক--এসো হে বৈশাখ।
বান্দরবানে পহেলা বৈশাখ মানেই রঙিন উৎসবে বাঙালীর প্রাণের সঞ্চার- বলেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক -থানজামা লুসাই।
‘মঙ্গল’ নির্বাসনে, বৈশাখে এবার ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’ জেলা পরিষদ, জেলা প্রশাসক,পুলিশ প্রশাসক,পৌরসভার প্রশাসক,আনসার প্রশাসক, স্কাউট সহ বিভিন্ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
বান্দরবান জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি কর্তৃক নব বর্ষবরণে উদ্বোধন, র্যালী শোভা যাত্রা আলোচনা প্রভৃতিতে উপস্থিত ছিলেন -
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই, বান্দরবান জেলার পুলিশ সুপার মোঃ শহিদুল্লাহ কাওছার, পিপিএম(বার), বান্দরবান পৌরসভার প্রশাসক উপপরিচালক (ভা:প্রা:), স্থানীয় সরকার, এস এম, মনজুরুল হক, জেলার বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা, বিভিন্ন শ্রেণীর -পেশাজীবী ও ছাত্র ছাত্রী বৃন্দ।
শোভাযাত্রা বাঙালির বর্ষবরণের অনুসঙ্গ হয়ে উঠেছিল,
এবার পহেলা বৈশাখে যে শোভাযাত্রা বান্দরবান জেলা প্রশাসক বের হয়ে তার নাম ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’
১৪ ই এপ্রিল সোমবার বান্দরবানে অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বছরের শোভাযাত্রা হয়েছে বড়, বর্ণাঢ্য ও জাঁকজমকপূর্ণ। শোভাযাত্রায় বৈচিত্র্য ও বিভিন্ন জাতিসত্তার অংশগ্রহণ ।
১৯৮৯ সাল থেকে চলে আসা এই শোভাযাত্রা ২০১৬ সালে জাতিসংঘ সংস্থা ইউনেস্কোর বিশ্বের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় যুক্ত হয়।
অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বছরের শোভাযাত্রা হবে বড়, বর্ণাঢ্য ও জাঁকজমকপূর্ণ। শোভাযাত্রায় বৈচিত্র্য ও বিভিন্ন জাতিসত্তার অংশগ্রহণ ।
গত বছর জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নাম পরিবর্তনের যে হিড়িক চলছে, তাতে এখন যুক্ত হলো পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রার নাম।
জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি বলেন, “এই শোভাযাত্রার মূল প্রতিপাদ্যে দুটো মেসেজ আছে। একটি হচ্ছে, কিছু মোটিফ সেই কাজটি করছে। আর দ্বিতীয় যে অংশটি আছে, সেটি হচ্ছে মূলত ঐক্যের ডাক, সম্প্রীতির ডাক।”
নিসার হোসেন বলেন, “৬০ দশকের মাঝামাঝি সময় প্রথম একটি শোভাযাত্রা হয়। সেখানেও শিল্পীদের আঁকা নানান ছবি ব্যানার নিয়ে শোভাযাত্রাটি হয়। শোভাযাত্রার মূল ব্যানারে লেখা ছিল- এসো হে বৈশাখ।”
১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময় শিল্পী জয়নুল আবেদিনও নববর্ষ উদযাপনে কর্মসূচি নিয়েছিলেন বলে জানান তিনি।
“গণঅভ্যুত্থানের সময় জয়নুল আবেদিন স্যার শিল্পীদের একত্রিত করছিলেন। সে সময় নবান্ন উৎসবসহ নানা ধরনের আয়োজন হচ্ছিল। তখন আমাদের শোনা, নববর্ষ পালনেও কর্মসূচি করা হয়েছিল।”
বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষে -পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাওছার বলেন, পহেলা বৈশাখ অশুভকে পেছনে ফেলে নতুন উদ্যমে সামনে এগিয়ে চলতে অনুপ্রেরণা যোগায়। ব্যর্থতার সকল গ্লানী মুছে দিতেই প্রতি বছর নতুন আঙ্গিকে ফিরে আসে পহেলা বৈশাখ। পহেলা বৈশাখ বাঙালীর মহা ঐক্যের দিন। এমন উৎসবমূখর দিন ধর্ম, বর্ণ, জাত বা গোত্রের সিমারেখা ভেঙে এক সাথে একই পথে চলতে আমাদের অনুপ্রেরণা।
পহেলা বৈশাখ মানেই রঙিন উৎসবে বাঙালীর প্রাণের সঞ্চার।
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সরকার জাতীয়ভাবে বাংলা নববর্ষ এবং চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর নববর্ষ ১৪৩২ উদ্যাপন উপলক্ষ্যে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক উৎসব আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বাঙালি জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও রাখাইনসহ ২৭টি জাতিগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সর্বজনীন নববর্ষ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় পর্যায়েও এসব জাতিগোষ্ঠীর নিজস্ব সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য তুলে ধরে স্থানীয় উৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে।
প্রথমবারের মতো জাতীয়ভাবে চৈত্র সংক্রান্তি উদযাপিত হতে যাচ্ছে। চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে সরকার তিনটি পার্বত্য জেলায় এক দিনের সাধারণ ছুটি এবং দেশের অন্যত্র সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর জন্য ঐচ্ছিক ছুটি ঘোষণা করেছেন।
এছাড়াও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে ১৩-১৪ই এপ্রিল ২০২৫ নবপ্রাণ আন্দোলন কর্তৃক আয়োজিত চৈত্র সংক্রান্তি ও বৈশাখ উদ্যাপন অনুষ্ঠান 'বাংলার উৎসব ১৪৩২' অনুষ্ঠিত হবে। জেলা পর্যায়েও চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয় । বাঙালিসহ ২৮টি জাতিগোষ্ঠীর অংশগ্রহণে সারা বাংলায় এলাকায় ঐতিহ্যবাহী 'বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা' অনুষ্ঠিত হয়।
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট, খাগড়াছড়ি কর্তৃক ৪-৭ই এপ্রি ২০২৫ বৈসু, সাংগ্রাইং, বিজু, বিষু, বিহু, সাংলান ও বাংলা নবক ১৪৩২ উদ্যাপিত হয়েছে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট রাঙ্গামাটি কর্তৃক পহেলা বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দে বৈশাখী শোভাযাত্রা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত । তাছাড়াও ইতোমধ্যে আ প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে ৩-৯ই এপ্রিল ২০২৫ বিজু, সাংগ্রাইং, বৈসুক বিষু, বিহু মেলা ২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট বান্দরবান কর্তৃক ১২, ১৩, ১৫, ১৭, ও ১৮ই এপ্রিল ২০২৫ সাংগ্রাই বিজু ও বৈসু উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। ঐতিহাসিক বান্দরবান রাজার মাঠে প্রাঙ্গণে ১৪-১৮ই এপ্রিল ২০২৫ বিষ্ণু/ভে সংক্রান্তি/পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে মেলা, ঐতিহ্যবাহী নিকন খেলা স্বকীয় পোশাক প্রদর্শনী এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উর্ধতন কমর্র্কতা এবং জেলায় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
অসীম রায় (অশ্বিনী)
বান্দরবান
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন